প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্ব ও বিচক্ষণতায় বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত
হতে চলেছে। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে তিনি উন্নয়নশীল দেশকে উদীয়মান অর্থনীতির
দেশে উন্নীত করেছেন। তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার কারণে আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, জলবায়ুর পরিবর্তন, স্বাস্থ্য সেবা, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ
মোকবেলাসহ রাষ্ট্রের সবক্ষেত্রেই সফলতা এসেছে। দেশকে উন্নতির শিখরে তুলতে অক্লান্ত
পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। নতুন নতুন উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করে দেশকে
উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। ফলে দেশের জনগণের অবস্থা ক্রমে ভালো হচ্ছে
এবং তাঁর ওপর জনগণের আস্থাশীলতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নত বিশ্বের কাতারে।
তাঁর গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বিশ্বের
কাছে রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ১১ শতাংশ
অর্জনে সক্ষম হয়েছে। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
জিডিপি প্রবৃদ্ধির
হার বৃদ্ধি পাওয়া এবং এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা তাঁর সরকারের একটি বিরাট সাফল্য। যে
সাফল্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চিত্র ফুটে ওঠেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন
একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এ বিষয়টিকে অগ্রাধিকার
দিয়ে উন্নত দেশের মতো বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের
যোগাযোগ ব্যবস্থা। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সুফল ইতোমধ্যেই পেতে শুরু করেছে দেশের
জনগণ। সরকারের জন্যে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণ। কিন্তু স্বপ্নের পদ্মা
সেতু আজ বাস্তবে দৃশ্যমান হতে চলেছে এবং পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে
যাচ্ছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে হাতিরঝিল প্রকল্প, কুড়িল-বিশ্বরোড বহুমুখী উড়াল সেতু, মিরপুর-বিমানবন্দর জিল্লুর রহমান উড়াল সেতু, বনানী ওভারপাস, গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ীতে
মেয়র হানিফ উড়াল সেতু, টঙ্গীতে আহসানউল্লাহ
মাস্টার উড়াল সেতু এবং চট্টগ্রামে বহদ্দারহাট উড়াল সেতুসহ আরও বহুসংখ্যক সেতু ও ইউলুপ
ইতোমধ্যেই উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মগবাজার-মৌচাক
উড়াল সেতুর একাংশও তিনি উদ্ধোধন করেছেন। অন্য অংশের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। দেশের যোগাযোগ
ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করণ, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণ, মেট্রোরেল, গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর
বাস র্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্প, ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক
চার লেনে উন্নীত করণ, কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী ২য় সেতু নির্মাণ, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগের মতো বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ অনেকাংশ
সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ এগিয়ে চলছে। শেখ হাসিনার প্রযুক্তিবান্ধব কৃষিনীতির কারণেই
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর
সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক
নির্মাণ করছে। ২০১৭ সালের মধ্যেই এ হাইটেক পার্কে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর কারখানা চালু
করা হবে। ৩৩৫ একরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি বাংলাদেশে প্রথম হাইটেক পার্ক। আন্তর্জাতিক
তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আকৃষ্ট করার জন্যে আগামী ১০ বছর এখানে কোনো করপোরেট
কর নেওয়া হবে না। এ রকমের আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা দেওয়ায় এ হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ
করার জন্যে জাপান, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ভারতের বেশ কিছু
প্রতিষ্ঠানসহ আরও দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সরকার রাজধানী ঢাকা থেকে হাইটেক পার্কে যাওার
জন্যে দ্রুতগতির রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করবে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)
তত্ত্বাবধানে দুবাইয়ের ১০৪ তলা বুর্জ খলিফার আদলে পূর্বাচলে নির্মাণ হচ্ছে ১৪২ তলা
সুউচ্চ আইকন টাওয়ার। ২ হাজার ১৪৫ ফুট সম্ভাব্য সুউচ্চ এ ভবনটি নির্মিত হলে এটি হবে
এশিয়ার সর্বোচ্চ এবং বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ মাল্টি-পারপাস টাওয়ার ভবন।
শেখ হাসিনা
সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে তা এখন ১৫ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১০০ অতিক্রম করেছে। সারা দেশে ৪৪ লাখ সোলার প্যানেল বসানো
হয়েছে। দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক
স্থাপন এবং উপজেলা-জেলা হাসপাতালগুলোতে মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা টেলিমেডিসিন সিস্টেমসহ
চালু করা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। কৃষকদের জন্যে কৃষিকার্ড, ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা করেছে শেখ হাসিনা। তাঁর
রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে দেশে দারিদ্রের হার ২৪.৩ শতাংশে হ্্রাস পেয়েছে। শেখ হাসিনা
বাংলাদেশকে নি¤œ আয়ের দেশ থেকে নি¤œ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪১৬ ডলারে
উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছেন। ২৯ বিলিয়ন ডলারের ওপর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর সূচকে শেখ হাসিনার সাফল্যে বিশ্বনেতৃবৃন্দ
রীতিমতো অবাক হয়েছেন। যার স্বীকৃতি স্বরূপ ইতোমধ্যেই সাউথ সাউথ পুরস্কার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা। পেয়েছেন ইউএনএমডিজি পুরস্কারও। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার
‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়নের বিভিন্ন
ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সাল থেকে
এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২৭টি পুরস্কার অর্জন করেছেন। তাঁর সরকার ইতোমধ্যে ৩৫
লাখ ৭৫ হাজার ৩৪৮ জন কর্মীকে বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে এবং করে যাচ্ছে।
বার্ষিক রপ্তানি আয় হয়েছে ৩২ দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে
জলসীমা চুক্তির বিরোধের নিষ্পত্তি করতে পেরেছেন। স্থল সীমান্ত চুক্তি করে ভারত ও বাংলাদেশের
মধ্যে ৬৮ বছরের সীমানা বিরোধের নিষ্পত্তি করতে পেরেছেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের
বিভিন্ন জেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা
হাতে নিয়েছেন। ইতোমধ্যে ১৬টির কাজ চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সুদীর্ঘ ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধ
অবসানের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার অসামান্য অবদান রয়েছে। এই শান্তি প্রক্রিয়ায় তাঁর উল্লেখযোগ্য
অবদানের জন্যে ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো তাঁকে ‘হফোয়েট বোজনি’ শান্তি পুরস্কারে
ভূষিত করে। শেখ হাসিনা ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ৭ম
এবং ২০১০ সালে নিউইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরিপে বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের
মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে ছিলেন।
অর্থনৈতিক
অগ্রগতি,
অবকাঠামো নির্মাণ, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি
থেকে বেরিয়ে আসার কারণে আওয়ামী লীগ তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি
মানুষের সমর্থন দিন দিন বাড়ছে। এ পর্যন্ত কোনো হামলা-হুমকি, আন্দোলন তাঁকে লক্ষ্য থেকে দূরে সরাতে পারেনি। অকুতোভয় সাহসী
জননন্দিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে স্বীকৃতি
অর্জন করেছে। তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকার কারণেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে নতুন মর্যাদায়
অভিষিক্ত হয়েছে।
উন্নয়নের
ধারা অব্যাহত রাখার জন্যে এবং দেশের সমৃদ্ধি কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই
সম্ভব। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক। সমৃদ্ধ হোক জনগণের
জীবনমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের আকাক্সক্ষা ও প্রত্যাশানুযায়ী এ দেশের অর্থনৈতিক
বিকাশ ত্বরান্বিত করেছেন। তাঁর নেতৃত্বের সাফল্যে বাংলাদেশ আজ গৌরব জনক অধ্যায়ের সূচনা
করেছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি প্রতিষ্ঠায় এদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে উন্নীত করেছেন।
আমেরিকা,
চীন, জাপান, ভারত, বিশব্যাংকসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান এবং সংস্থার প্রধানেরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়শী
প্রশংসা করে যাচ্ছেন।
মন্তব্য
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন