একই সময়ে দুই দেশে ঘুমানো সম্ভব যেভাবে। এমন একটি হোটেল যেখানে যে কারো আপনার পা থাকবে ফ্রান্সে আর মাথা থাকবে সুইজারল্যান্ডে
একই রাতে
ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডে ঘুমাবেন কীভাবে? হোটেল আরবেজে একটা ঘর ভাড়া করুন।
আলপাইন পর্বত এলাকার ওই সরাইখানার অবস্থান
ফরাসি-সুইস সীমান্তের লা কুর শহরে।হোটেলটির কয়েকটি কক্ষের মাঝখান দিয়ে গেছে দুই দেশের অভিন্ন সীমান্তরেখা। সেখানকার
একেকটি বিছানায় ঘুমালে আপনার মাথা থাকবে এক দেশে, পা আরেক দেশে। মধুচন্দ্রিমা
যাপনকারী যুগলদের জন্য বরাদ্দ থাকে এ রকম বিশেষ কক্ষ ও শয্যা। এ হোটেলে একটি
অতিথিকক্ষ আছে, যা সম্পূর্ণ সুইজারল্যান্ডে হলেও বাথরুমটা ফ্রান্সে।গল্প নয়, সত্যিই আছে হোটেলটা। সেখানে অতিথিরা নিতে পারেন দুই সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের স্বাদ। কারণ, হোটেলের রেস্তোরাঁটিতেও দুই ভাগ: ফরাসি রসনা আর সুইস রান্নার আয়োজনে সমৃদ্ধ। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ‘দুটো দেশ একই বিছানায় ঘুমায় আর একই টেবিলে খায়’।
(Md Shariful Islam)অভিনব এই হোটেল প্রতিষ্ঠার গল্পটাও মজার। ১৮৬০-এর দশকের শুরুতে এটির যাত্রা শুরু। এর দুই বছর পর আলপাইন এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড একটি চুক্তি সম্পাদন করে। সে অনুযায়ী সুইসরা লা কুরের কিছু অংশ পায়, আর বাকি অংশ ফ্রান্সের অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই স্থানীয় ব্যবসায়ী এম পন্থুস একটি দোকান বসিয়ে দেন এমন এক জায়গায়, যা নতুন সীমান্তের ঠিক মাঝ বরাবর পড়ে যায়। সেটিই এখনকার হোটেল আরবেজ। পন্থুস সময়মতোই আন্তসীমান্ত বাণিজ্যের সম্ভাবনার ইঙ্গিত পেয়েছিলেন। তিনি নিজ দোকানের ফরাসি অংশে পানশালা আর সুইস অংশে মুদি দোকান বসিয়েছিলেন। এটি ১৯২১ সালে কিনে নেন স্থানীয় আরেক ব্যবসায়ী জুল-জ্যঁ আরবেজ। তারপর নিজ নামে হোটেল ব্যবসা খুলে বসেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনী ফ্রান্সে হানা দেয়। কিন্তু নিরপেক্ষ দেশ বলে সুইজারল্যান্ড ছিল লড়াইয়ের বাইরে। জার্মান সেনারা সেখানে প্রবেশ করতে পারেনি। তাই ফেরারি অনেকেও নিরাপদে হোটেলটির দোতলার অতিথি হতে পারতেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন