রাজধানীতে সিটিং বাসের চিটিংবাজী

রাজধানীতে অর্ধশতাধিকের বেশি পরিবহন নিজেদের ইচ্ছেমতো সিটিং সার্ভিস বানিয়ে বাড়তি ভাড়া আদায়ের প্রতিযোগিতায় নেমেছে বলে অভিযোগ রয়েছে বলে দেখা যায় সংবাদপত্রের ভাষ্যে । 
সিটিং সার্ভিসের নামে রাজধানী জুড়েই চলছে এ রকম অরাজকতা। প্রতারণা। ‘কম স্টপেজ’ বা ‘সিটিং সার্ভিস’ লিখে যে যার ইচ্ছেমতো বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। কারো কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। নেই জবাবদিহিতা। 
যাত্রীসেবায় বিশ্বাস হারানো যাত্রীদের টানতে এখন বিভিন্ন পরিবহন আল্লাহর নামে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করছেন খোদ সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেছেন সরকারের গাড়ির গায়ে লেখা ‘সিটিং সার্ভিস’, অথচ ভেতরে লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। এটি সিটিং নয় একটা ‘চিটিং সার্ভিস’। কোন কোন বাসের গায়ে লিখা ‘আল্লাহর কসম সিটিং সার্ভিস’! কোনটায় লিখা ‘আল্লাহর কসম ভিআইপি সার্ভিস’! 


বেশিরভাগ সিটিং সার্ভিস বাসে ফ্যানের কোন ব্যবস্থা নেই। জানালা ও আসন ভাঙ্গাচোড়া। তেমনি যাত্রীও তোলা হয় যেখানে সেখানে। অপরিচ্ছন্ন আসন। ছাড়পোকার দৌরাত্ম্য। লক্কড়ঝক্কড় বাস। ইঞ্জিনের ওপর বসানো হয় যাত্রী। সব মিলিয়ে মানসম্মত গণপরিবহন একেবারে নেই বললেই চলে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিআরটিএ’র কোন অনুমোদন ছাড়াই রাজধানীতে পরিবহনের বেশিরভাগ বাস সিটিং সার্ভিস হয়ে চলছে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতারাতি সাধারণ বাস সিটিং সার্ভিস হিসেবে চালানো হচ্ছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, সিটিং সার্ভিসের নামে রাজধানীতে ৮৭ ভাগ পরিবহন যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি অর্থ আদায় করছে। 
সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে রাজধানীতে বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১০ পয়সা বাড়িয়ে এক টাকা ৭০ পয়সা করা হয়। মিনিবাসের ভাড়াও ১০ পয়সা বেড়ে এক টাকা ৬০ পয়সা হয়েছে। সে হিসেবে ১০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করলে বাসগুলোতে মাত্র এক টাকা বেশি ভাড়া নেয়ার কথা। কিন্ত এই পরিমাণ দূরত্বে ঢাকার বিভিন্ন রুটের পরিবহনগুলোকে নতুন ভাড়া কার্যকরের অজুহাতে দুই টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেশি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। এছাড়া ‘লোকাল’ বাসগুলো আগে যেখানে পাঁচ টাকা ভাড়া নিত এখন সেখানে ছয় টাকা নিচ্ছে। আবার আগের ৭/৮ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ১০ টাকা হারে।
রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস চালানোর নামে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার কোন বৈধতা নেই। কারণ গাড়ির আসন বিবেচনা করে বিআরটিএ থেকে ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। এই হিসেবে কোন পরিবহনেই দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কথা নয়। কিন্তু একদিকে বাস কোম্পানিগুলো দাঁড়িয়ে যাত্রী নিচ্ছে অন্যদিকে সিটিংয়ের নামে বাড়তি ভাড়াও নিচ্ছে। এখন প্রকাশ্যে স্টিকার লাগিয়ে সিটিং সার্ভিস চলছে। এসব বাস কোম্পানিকে সহজেই চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া খুবই সহজ কিন্ত সহজ কাজটি সহজে করা হচ্ছেনা । 
বিআর টিএ এ দিয়ে কোন সুফল আসছেনা তখন প্রয়োজন শক্তিশালী নাগরিক সচেতনতা । এর ফলে ঢাকা বাসী ২ কোটি মানবের জীবন সংগ্রামে এনে দিতে পারে কিছুটা স্বস্থি । বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন মিডিয়া সরগরম থাকলে একটা সুফল আসতে পারে বলে বিশ্বাস । 

মন্তব্যসমূহ