একটা দৈনিক তথ্যধারা পত্রিকা দেন। গ্রাহক এ
পত্রিকাটি চাইতেই হাতে থাকা পত্রিকার বোচকায়
হাত বুলিয়ে একটা তথ্যধারা পত্রিকা বের করে দিলো দৃষ্টি প্রতিবন্ধি
আব্দুল কুদ্দুছ মোল্লা (৪২)। চোখে দেখে না। দু’চোখই অন্ধ। একটা লাঠিই তার চলার পথের চিরসঙ্গী। পত্রিকার বোচকা হাতে নিয়ে লাঠিটা
ঠুক-ঠুক করে সামনে বারান আর আর পথ আন্দাজ করেই
ধীর পায়ে সামনে এগিয়ে চলে।
কেউ
কোনো পত্রিকা চাইলে হাত বুলিয়ে সে পত্রিকাটাই বাড়িয়ে দেয় গ্রাহকের হাতে।
গ্রাহক পত্রিকা হাতে নিয়ে টাকা ধরিয়ে দিলেই হাত বুলিয়েই বুঝতে পারে কত টাকা।
নোট হলে টাকা ভেঙ্গে দিতে কোনো সমস্যা হয় না তার। লেখা-পড়া বলতে অক্ষর
জ্ঞানহীন। জন্ম থেকেই অন্ধ। অথচ পত্রিকার হকার। জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে
পত্রিকা কিক্রি করেই সংসারের ঘানি টানেন।
স্ত্রী,
এক ছেলে ও এক মেয়ে
সন্তান নিয়ে তার
সংসার। ছেলে জান্নাত আলী বিয়ে করে ঘর-সংসার বেঁধেছে। মেয়ে স্বপ্নাকেও বিয়ে
দিয়েছেন। প্রায় ১০বছর যাবত সে পত্রিকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে অন্ধ আব্দুল কুদ্দুছ কারও না কারও মোটর সাইকেল,
রিকশা, অটো রিকশা কা বাস যোগে নাগেশ্বরী উপজেলা
সদর থেকে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা নিয়ে হেঁটে হেঁটেই পত্রিকা বিক্রি করে বেড়ায়।
এতে করে প্রতিদিন
১শ থেকে ১শ ৫০ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই মেয়ের লেখা-পড়ার খরচ আর সংসারের খরচ যোগাতে হিমশিম খায় আব্দুল
কুদ্দস।
বসত
ভিটা বলতে ২শতক জমির মধ্যে ৪চালা ১টি টিনসেড এবং ১টি খরের ঘর। তবুও কারো কাছে
২টাকার জন্য হাত পাততে অসম্মানবোধ মনে করে সে। আব্দুল কুদ্দুস বলেন,
অন্যের দ্বাড়ে দ্বাড়ে
ঘুরে হাত পেতে পেতে ভিক্ষা করার চেয়ে কর্ম করে খাওয়াতে মনে অনেক প্রশান্তি অনুভব
হয়। এতে আÍ তৃপ্তি
আছে। নাগেশ্বরী সংবাদপত্র হকার সমিতির সভাপতি নুর আলম বাবু, আব্দুল আউয়াল বলেন, আব্দুল কুদ্দুস আগে ভিক্ষা করে বেড়াত।
পত্রিকা
বিক্রির কাজে লাগিয়ে এখন আর তাকে ভিক্ষা করতে হয় না। সে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান। তার হাতে
কোনো পত্রিকা ধরিয়ে দেয়ার
সময় পত্রিকার নাম বলে দিলে পরে আর সমস্যা হয় না। সে নিজে নিজেই গ্রাহকের কাছে পত্রিকা বিক্রি করতে পারে। আব্দুল
কুদ্দুছের বাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের গাটির খামার এলাকায়। সে মৃত
মনির উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
কোনো সরকারি সহায়তা পেলে ভালো করে পত্রিকার ব্যবসা করতে পারবে আব্দুল কুদ্দুস।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন